রবিবার ৪ মে ২০২৫ - ২২:৪৩
“হিজাব” হচ্ছে দায়িত্বশীলদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক পরীক্ষা

হাওজা ইলমিয়ার সর্বোচ্চ পরিষদের মহাসচিব বলেছেন, “হিজাব” শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় বিধান নয়, বরং এটি আমাদের ইসলামি সংস্কৃতির প্রতীক।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হাওজা ইলমিয়ার সর্বোচ্চ পরিষদের মহাসচিব বলেছেন, “হিজাব” শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় বিধান নয়, বরং এটি আমাদের ইসলামি সংস্কৃতির প্রতীক। আজ হিজাব একটি সাংস্কৃতিক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে এবং এটি দায়িত্বশীলদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা।

আজ দুপুরে তেহরানের মেয়র আলিরেজা জাকানী ও তাঁর উপদেষ্টাদের একটি প্রতিনিধি দল হাওযা ইলমিয়ার সর্বোচ্চ পরিষদের সভাকক্ষে আয়াতুল্লাহ শাবজান্দেহদারের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও আলোচনা করেন।

এই সাক্ষাতে আয়াতুল্লাহ শাবজান্দেহদার “দাওলাতে কারিমা” সংক্রান্ত একটি প্রার্থনার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন:
“ইসলামি শাসন এমন এক ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে পার্থিব ও পরকালীন মর্যাদা বাস্তবায়িত হয়।”

ইসলামি ব্যবস্থার লক্ষ্য: বিশ্বজুড়ে ইসলাম ও মুসলমানদের মর্যাদা বৃদ্ধি

তিনি উল্লেখ করেন, এই প্রার্থনা ও শিক্ষার আলোকে ইসলামি ব্যবস্থার পবিত্র লক্ষ্য হলো—বিশ্ববাসীর চোখে ইসলাম ও মুসলমানদের মর্যাদা বৃদ্ধি করা।

তিনি আরও বলেন, কিছু বিদেশি অতিথিরা আমাদের নগরী ও বিমানবন্দরগুলোর পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। হেরেম (ধর্মীয় স্থান)-এর আশেপাশে অতিরিক্ত দাম আদায়ের মতো অনুচিত আচরণ ইসলামী বিপ্লব ও শাসনের ভুল চিত্র তুলে ধরতে পারে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসলামের বিধান ও নৈতিকতা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করতে হবে, যাতে বিশ্ববাসী এর সত্যতা উপলব্ধি করতে পারে।

আয়াতুল্লাহ শাবজান্দেহদার বলেন, যেভাবে ইমাম খোমেনি (রহ.) আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, তেমনিভাবে আজও ইসলামের পথ অগ্রসর করার জন্য দায়িত্বশীল ও জনগণের নিঃস্বার্থ ইচ্ছাই প্রধান শর্ত।

ইসলাম ও ইসলামী ব্যবস্থার সেবা করা হল সর্বোচ্চ ইসার (ত্যাগের চেতনা)

কোম হাওজা ইলমিয়ার উস্তাদ ও গার্ডিয়ান কাউন্সিলের সদস্য ইসারকে সব আসমানি ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন:
“ইসলাম ও ইসলামী ব্যবস্থার সেবা করা ইসারের সর্বোচ্চ রূপ।”
তিনি একটি দোয়াও উদ্ধৃত করেন:
“হে আল্লাহ! আমাকে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করো, যাঁদের মাধ্যমে তুমি তোমার ধর্মের সাহায্য করো, এবং আমাকে কোনোদিন এমন একজন দিয়ে প্রতিস্থাপন করো না, যে তার উপযুক্ত নয়।”

তিনি আরও বলেন, কোনো কাজ যেন শুধু একক ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল না হয়। সঠিক পরিকল্পনা এবং ধারাবাহিক ও নিয়মতান্ত্রিক কর্মপ্রবাহের মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যেতে হবে, যেন প্রশাসনের পরিবর্তনে কাজ বন্ধ না হয়ে যায়। সিদ্ধান্তগুলোকে অস্থায়ী না রেখে আইনি কাঠামোর আওতায় আনতে হবে।

ইসলামী ব্যবস্থার মাধ্যমে মানব মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব

আয়াতুল্লাহ শাবজান্দেহদার বলেন, ইসলামী সরকার হচ্ছে মানব মর্যাদার বাস্তবায়নের ক্ষেত্র। ইসলামকে যথাযথভাবে উপস্থাপন, খালিস নিয়ত এবং জ্ঞানভিত্তিক প্রশাসনের গুরুত্ব তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, সেবাগুলো যেন ব্যক্তি নির্ভর না থেকে দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং তা আইনের রূপ নিক।

হিজাব প্রসঙ্গে:
তিনি বলেন, কার্যনির্বাহী প্রতিষ্ঠানে হিজাব পালনের দায়িত্ব অবশ্যই প্রথমে কর্মকর্তাদের উপর বর্তায়।
আজ শত্রুরা হিজাবের বিষয়টি ব্যবহার করে ইসলামি মূল্যবোধকে পরিবর্তনের চেষ্টা করছে।

“হিজাব” — ধর্মীয় অনুগত্য ও আল্লাহর প্রতি ভালোবাসার প্রতীক

তিনি বলেন, সর্বোচ্চ সাংস্কৃতিক বিপ্লব পরিষদের হিজাব সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত অনুসারে, তেহরান সিটি কর্পোরেশন একটি সফল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে ইসলামি হিজাব পালনের ক্ষেত্রে।
তিনি উল্লেখ করেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ নেতা হিজাবকে ধর্মীয়তা ও আল্লাহর প্রতি অনুরাগের প্রতীক হিসেবে গণ্য করেন।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha